নিজস্ব প্রতিবেদক দুর্গাপুর রাজশাহী,
রাজশাহীর দুর্গাপুরের যুগিশো গ্রামের বয়েন উদ্দিন খামারুকে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদী হয়ে উঠছে গ্রামবাসী। তাঁর ভুয়া মুক্তিযুদ্ধের সনদ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষভ মিছিল করেছে বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষ।
আজ (২০ সেপ্টেম্বর ২৩ খ্রি:) বুধবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার যুগিশো মানববন্ধন ও বিক্ষভ মিছিল কর্মসূচী পালন করেন যুগিশো গ্রামবাসী। মানববন্ধনে ওই গ্রামের প্রায় চার থেকে পাঁচ শতাধিক বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বয়েন খামারু উদ্দিন খামারু কখনো মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি। প্রতারণা করে টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েছে। তাঁর দুই সন্তানকেও প্রতারণা করে চাকুরি দিয়েছেন। যা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য লজ্জার ও অপমানজনক। বয়েন উদ্দিন রাজাকার পরিবারের সন্তান। বয়েনের বড় ভাই তালিকাভুক্ত রাজাকার ও বাবা মহসিন খামারু শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা না হয়ে কীভাবে সরকারি ভাতা নেয় ও সন্তানদের চাকরি দেয়। সেটা তদন্ত সাপেক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহব্বান জানান বক্তারা। এছাড়াও বক্তারা তাঁর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিলের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষভ মিছিলে অংশ নেয় উপজেলা যুবলীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আলামিন হোসেন,দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়নের ১ নম্বর যুগিশো ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার মন্ডল বলেন, দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, ১ নম্বর ওয়াড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মকলেছুর রহমান সহ গ্রামের বিভিন্ন শ্রেনির পেশার মানুষ।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল করিম বলেন, অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারি উভয়ের তথ্য পর্যবেক্ষণ করা হবে। তারপর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা) সুপারিশ করা হবে।
এ ব্যাপারে নতুন করে তালিকায় নাম আসা অভিযুক্ত দুই মুক্তিযোদ্ধার বয়েন উদ্দিন খামারুর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রেরিত তথ্যমতে দুর্গাপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার ৬৫ নম্বর ক্রমিকে বয়েন উদ্দিনের নাম এসেছে। বেসামারিক গেজেটে তাঁর ক্রমিক নম্বর ২২৭৮। একই ভাবে বেসামরিক গেজেটের ২২৭৭ নম্বরে এসেছে কাশিপুর গ্রামের আমিরুল ইসলামের নাম। তাঁর ক্রমিক নম্বর ৬৪। এই দুজনকে নতুন করে তালিকায় স্থান দেয়া হয়েছে। যাতে করে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে।
প্রসঙ্গত; বয়েন উদ্দিন খামারুর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে নাম বাতিলের দাবিতে গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর জেলা প্রশাসক, দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরের লিখিত অভিযোগ করেন উপজেলা যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আলামিন হোসেন।
Post a Comment